বিশেষ প্রতিবেদক :
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন গত ১০ বছরের চলমান সরকারে টেকনাফে উন্নয়ন হয়নি বলে দাবি করেছেন খোদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী। তবে আশ্চর্য্যের বিষয় বৃহস্পতিবার সারা দেশের সাথে একযোগে আয়োজিত উপজেলা উন্নয়ন মেলায় বক্তব্যে এই দাবি করেন তিনি। মোহাম্মদ আলী বলেছেন, টেকনাফে গত ১০ বছরে কোন উন্নয়ন হয়নি। তবে তাৎক্ষণিক ভাবে এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান। এই ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ অঙ্গনে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে আজ (৪ অক্টোবর) থেকে সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে উন্নয়ন মেলা। এর ধারবাহিককায় টেকনাফ উপজেলা প্রশাসনও এই মেলার আয়োজন করে। মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১০ বছরের টেকনাফে কোনো উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা জনপ্রতিনিধিরা মিলে ভাগবাটোয়ারা করে খেয়েছে।
তবে তাৎক্ষণিক মোহাম্মদ আলীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা রবিউল হাসান বলেন, টেকনাফে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক, সাবরাং এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন, নাফ ট্যুরিজম জোন সহ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, যোগাযোগ ব্যবস্থায় নানা উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। একই সাথে আ.লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, ২ বিজিবির সিও কর্নেল আসাদ উজ জামান, সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, কক্সবাজারের চার উপজেলার মধ্যে উন্নয়নের দিক দিয়ে টেকনাফ মহেশখালীর পরে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টেকনাফকে বিশেষ নজর দিয়ে উন্নয়ন করছেন। কিন্তু স্বয়ং আওয়ামী লীগ সভাপতি তার অস্বীকার করছেন। মূলত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান সাথে বিরোধীতার কারণে তার উপর প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তিনি এমন অগ্রহণযোগ্য ও তীব্র সরকার বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলম বাহাদুর জানান, সারা বাংলাদেশে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের জোয়ার বইছে সেখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির এ ধরনের বক্তব্য দুঃখ জনক। তিনি এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন তুলে ধরতে এই আয়োজনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির এ ধরনের বক্তব্য দেয়া ঠিক হয়নি।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক কর্ণেল আছাদ উজ জামান বলেন, টেকনাফে গত ১০ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা ঈর্ষন্বীয়। উপজেলা আওয়ামীলীেেগ সভাপতির এধরনের বক্তব্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উন্নয়ন মেলার মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করবে।
অভিযোগে ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘টেকনাফে জাতীয়ভাবে উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সে উন্নয়নগুলোর প্রচার-প্রচারণা যথাযথ হয়নি। কোনো সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। অন্যদিকে স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা ভাগবাটোয়ারা করে খেয়েছে। প্রশাসনের দুর্নীতি ছিলো সীমাহীন। জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসনকে প্রশ্রয় দিয়েছে। সেই সত্য কথা বলেছি বলে তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
পাঠকের মতামত: